বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালি
পটুয়াখালির দুমকি উপজেলা শাখার সদস্য সচিব সালাহ্উদ্দিন রিপন শরীফকে প্রাথমিক সদস্য সহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করায় পটুয়াখালী জেলা রিপোটার্স ক্লাবে শুক্রবার (২১ মার্চ) ইফতারের পর সংবাদ সম্মেলন করেন সালাহ্উদ্দিন রিপন শরীফ। এর আগে বৃহস্পতিবার সালাউদ্দিন রিপন শরীফের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং তদন্ত সাপেক্ষে আদেশ পুনর্বিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী ও তার সমর্থকেরা। এতে জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় কয়েক সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছুই না।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেতা কর্মীদের ক্ষোভের ঝড় বইছে।সংবাদ সম্মেলন সালাহ্উদ্দিন রিপন শরীফ বলেন- গত ১৮ তারিখে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যুবদল থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো আমাকে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে তাও আমি এখনও জানিনা। আমার নেতৃত্বে যুবদলসহ বিএনপি এবং অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সংগঠিত থেকে রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে জোড়া খুনের মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে আমি এবং আমার ৮ জন আত্মীয়কে বাকশালী আদালত যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। এরপরও আমি আওয়ামী লীগের সাথে আপোষ না করায় ৩ টি অস্ত্র দিয়ে জঅই অনেক নাটকীয়তা করে গ্রেপ্তার করেছিল। দলীয় নেতাকর্মী, জনগণ এবং আপনারা সারারাত জেগে মহাসড়ক অবরোধ এবং থানা পাহাড়ায় না থাকলে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করতো।
বিগত ১৭ বছরে বেশিরভাগ সময়ই আমাকে জেল হাজতে কাটাতে হয়েছে আমি আপনাদের মাধ্যমে জনাব তারেক রহমান এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনারা আমার অজান্তে হলেও এলাকায় খোঁজ খবর নিবেন, আমার নিজের অজান্তে কোনো ভুলত্রুটি করে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন এবং আমার বহিষ্কারের আদেশ তুলে নিয়ে পুণরায় পদবীকে ফিরিয়ে দিবেন বলে বিশ্বাস করি।
উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. সালাউদ্দিন রিপন শরীফের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং তদন্ত সাপেক্ষে আদেশ পুনর্বিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল সাড়ে দশটায় বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা সেতুর টোলপ্লাজার সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় কয়েক সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, বিএলপি ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বশির উদ্দিন হাওলাদার, দুমকি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ সেলিম সিকদার, ছাত্রদল কর্মী খাদিজা আক্তার আশাসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, যুবদল নেতা রিপন শরীফ শতভাগ জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিক। তিনি বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ আমলে দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে বারবার কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় দেড় ডজনের অধিক মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপির দুর্দিনে তার ত্যাগ ভোলার মত নয়। তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেগুলো অধিক তদন্ত করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সালাউদ্দিন আহমেদ রিপন শরীফকে দল থেকে বহিষ্কার করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছুই না। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেতা কর্মীদের ক্ষোভের ঝড় বইছে। কর্মীরা বলছেন, রিপন শরীফ একটি আদর্শের নাম। বিগত ১৬ বছরে রিপন শরীফ ছাড়া দুমকিতে একটি মিছিলও বের হয়নি। প্রত্যেকটা মিছিলে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জেল খেটেছেন। হামলা, মামলা, শারীরিক নির্যাতনসহ এমন কোন জুলুম নেই যা থেকে রিপন শরীফ বাদ গেছেন তাই এর প্রতিফলন কি এই বহিষ্কার? ইমাম হোসেন নামের একজন তার ফেসবুক আইডিতে লিখছেন, পুরাই চক্রান্তের শিকার, ভাই যখন ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বার্থের জন্য ট্যাগ লাগায়, ধিক্কার জানাই এই নোংরা রাজনীতির, দুমকি উপজেলার ভিতর জেল জুলুম হমালা মামলা রিমান্ড খাওয়া এমন কোন দ্বিতীয় ব্যক্তি নাই যে তার মতন ত্যাগী। সে একজন সাচ্চা দেখি কর্মী তাই তার সদস্য পদ পুনর্বহালের দাবি জানাই। রাকিব শরীর তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, দলের জন্য রিপন ভাই কি-না করলো, একবার না, একাধিক বার না, প্রায় শতাধিক বার দলীয় বিভিন্ন রকম মামলায় ভাই গ্রেফতার হয়েছে। আজ তার প্রতিদান এভাবে দিচ্ছে ?
দুমকি উপজেলা যুবদলের “সদস্য সচিব” রিপন শরীফের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই। রিপন শরীফ কে নিয়ে অনেক বড় ষড়যন্ত্র চলছে কারণ রিপন শরীফের জন্য দুমকিতে কেউ চাঁদাবাজি সহ বিভিন্নরকম অপকর্ম করতে পারে না। যেখানেই অপকর্ম সেখানেই রিপন শরীফ বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাই রিপন শরীফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করে রিপন শরীফ-কে পথ সহ দল থেকে বহিষ্কার করিয়ে একদল অপশক্তি তাদের অপকর্ম চালিয়ে যেতে চায়। দলের জন্য রিপন শরীফের যে আত্মত্যাগ রয়েছে তা দুমকি উপজেলায় অন্য কোন নেতার নেই। তাই রিপন শরীফের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই।
রাহাত নামের একজন লিখেছেন,ব্যক্তি সালাউদ্দিন রিপন শরীফ, রাজনীতিবিদ রিপন শরীফ, কেমন ব্যক্তি সেটা দুমকি উপজেলা পটুয়াখালী জেলার সবাই অবগত। আমার মতে তিনি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। বিএনপির দুঃসময় নিজেকে সব সময় বিলিয়ে দিয়ে দিয়েছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। মিথ্যা মামল কারাবরণ করেছেন কখনো পালিয়ে বেড়াইনি। অত্যাচারিত হয়েছেন কিন্তু দলের প্রয়োজনে কখনোই পিছু হটে নি। অনেক নেতা আসছে গেছে কিন্তু তিনি সব সময় এক বাক্যে অনর ছিলেন সেটা দলের প্রয়োজনে, জনগণের প্রয়োজনে।
সেই দুমকি উপজেলা যুবদলের তথা পটুয়াখালী জেলার কান্ডারী সালাউদ্দিন রিপন শরীফ ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রে দল থেকে বহিষ্কার হয়। রাজনীতি আসলেই রাজনীতি। কোথায় ছিল দুর্দিনে এই রাজনীতিবিদগুলো। রিপন শরীফের মত একজন ত্যাগী নেতা অত্যাচারিত নেতা ও ভালো মানুষের সাথে এরকম ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়ার মতো না। দয়া করে কেউ মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত না হয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্যতার স্থান ও প্রাপ্ত সম্মান ফিরিয়ে দেয়া হোক এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হোক।
এটাই কাম্য। ভালোবাসা অবিরাম প্রিয় কাকা,দুমকি উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জনাব সালাউদ্দিন রিপন শরীফ। এছাড়াও অসংখ্য নেতাকর্মীরা রিপন শরীফের বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
প্রলয়/মোমিন তালুকদার